Sunday, July 8, 2018

শ্রীরামচন্দ্র দত্ত

রামচন্দ্র দত্ত ১২৫৮ সালে কলিকাতার পূর্বভাগে নারিকেলডাঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতার নাম নৃসিংহপ্রসাদ দত্ত, মাতার নাম তুলসীমণি। অল্প বয়সেই রামচন্দ্রের মাতৃবিয়োগ হয়। মাতৃহীন শিশুকে আত্মীয়েরা লালন-পালন করিতে থাকেন।

নৃসিংহপ্রসাদ প্রভূত ধনসম্পত্তির অধিকারী ছিলেন। কিন্তু দৈবদুর্বিপাকে সে সকলই নষ্ট হইয়া যাওয়ায়, তিনি বিশ্বনাথ দত্তের (গ্রন্থকারের পিতার) শিমলার বাটীতে আসিয়া বাস করেন। নৃসিংহপ্রসাদ সম্পর্কে বিশ্বনাথ দত্তের সহধর্মিণী ভুবনেশ্বরী দেবীর দাদামহাশয় ছিলেন। বিশ্বনাথ ও তাঁহার সহধর্মিণী রামচন্দ্রকে আপনাদের ছেলের মতো মানুষ করিতে লাগিলেন। তাঁহাদের ছেলেমেয়েরাও রামচন্দ্রকে বড় ভাই-এর মতো দেখিতেন ও তাঁহাকে 'রামদাদা' বলিয়া ডাকিতেন। রামচন্দ্র গ্রন্থকারকে 'চনি' বলিয়া ডাকিতেন।

রামচন্দ্র ক্যাম্বেল মেডিকেল স্কুল হইতে ডাক্তারি পাস করেন। পরে, তিনি বাংলা সরকারের রাসায়নিক পরীক্ষকের প্রধান সহকারী হইয়াছিলেন। অধ্যবসায়গুণে তিনি রসায়ন শাস্ত্রে সুনাম অর্জন করিয়াছিলেন। রসায়ন সম্বন্ধে ও অন্যান্য বিষয়ে তিনি কয়েকখানি গ্রন্থ ও প্রবন্ধাদিও রচনা করিয়াছিলেন। তিনি প্রভূত অর্থও উপার্জন করিয়াছিলেন।

রামচন্দ্র দয়া, পরোপকার প্রভৃতি বিবিধ সদ্গুণে ভূষিত ছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের সংস্পর্শে ও সংস্রবে রামচন্দ্রের ধর্মজীবনের গতি এক বিশিষ্ট ধারায় প্রবাহিত হয়। গুরুর প্রতি অব্যভিচারিণী ভক্তি তাঁহার ধর্মজীবনকে অপূর্ব-শ্রীমণ্ডিত করিয়া রাখিয়াছে। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের নাম ও ভাব প্রচার-প্রচেষ্টায়, প্রথমকালে, রামচন্দ্রই ছিলেন অধিনায়ক।

১৩০৫ সালে রামচন্দ্র পরলোক গমন করেন।