Sunday, April 1, 2018

স্ত্রীভাবে

পরমহংস মশাই যখন স্ত্রীলোকদিগের নিকট বসিতেন তখন একেবারে স্ত্রীভাবাপন্ন হইয়া যাইতেন। স্ত্রীলোকেরা সেই সময় মনে করিতেন যে, তাঁহারা একজন গিন্নীবান্নি স্ত্রীলোকের কাছে বসিয়া আছেন। অল্পবয়স্কা স্ত্রীলোকেরা মনে করিতেন যে, তাঁহারা একজন প্রবীণা স্ত্রীলোকের কাছে বসিয়া আছেন। এইজন্য স্ত্রীলোকদিগের দ্বিধা বা সংকোচের ভাব থাকিত না। একজন পুরুষমানুষের কাছে বসিয়া আছেন - এ ভাব তাঁহাদের মনে হইত না।

পরমহংস মশাই সাধনকালে 'সখীভাব' লইয়া বা স্ত্রীভাবাপন্ন হইয়া সাধন করিয়াছিলেন। তিনি যে স্ত্রীভাবাপন্ন হইতে পারিতেন, এ বিষয়ে অনেক উদাহরণ দেওয়া যাইতে পারে। এ স্থলে একটি উদাহরণ দিতেছি:

দক্ষিণেশ্বরে এক বার থিয়েটারের অনেকগুলি অভিনেত্রী গিয়াছিল। তাহারা পরমহংস মশাইকে 'সীতা' ও 'সাবিত্রী' অভিনয় করিয়া দেখাইল। পরমহংস মশাই তাহাদিগকে কীর্তনগায়িকাদের দূতীসংবাদ ইত্যাদি অভিনয় করিয়া দেখাইলেন। কীর্তনগায়িকারা অভিনয়কালে কি করিয়া তাহাদের বড় নথটি উঠাইয়া পানের পিচ ফেলে, কি করিয়া হাত নাড়ে, কি করিয়া গলা ও মাথা নাড়ে - তিনি তাহা অবিকল দেখাইতে লাগিলেন। অভিনেত্রীরা ইহাতে আশ্চর্য হইয়া বলিল, "ইনি সাধু হয়ে কি করে এত মেয়েলি ঢং জানেন!" এখন প্রশ্ন হইতেছে যে পুরুষমানুষ হইয়া তিনি কি করিয়া এইরূপ অবিকল স্ত্রীভাব বিকাশ করিতে পারিতেন, যাহাতে স্ত্রীলোকদেরও ধাঁধা লাগিত।

ইহা জানা আবশ্যক যে, মানুষের দেহ দুই ভাগে বিভক্ত। একটি হইল - পুরুষ-স্নায়ু ও পুরুষ-যন্ত্রাদি; অপরটি হইল - স্ত্রী-স্নায়ু ও স্ত্রী-যন্ত্রাদি। একটি হইল প্রকাশিত, আর একটি হইল সুষুপ্ত। একটি হইল মুখ্য, আর একটি হইল গৌণ। পুরুষের ভিতর পুরুষ-স্নায়ু ও পুরুষ-যন্ত্রাদি বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরে স্ত্রী-স্নায়ু ও স্ত্রী-যন্ত্রাদি বিদ্যমান। স্ত্রীলোকের ভিতরও স্ত্রী-স্নায়ু ও স্ত্রী-যন্ত্রাদি হইল বাহ্যিক, এবং অভ্যন্তরে পুরুষ-স্নায়ু ও পুরুষ-যন্ত্রাদি বিদ্যমান। স্ত্রীলোকদিগের মধ্যে কখনো কখনো দেখা যায় যে, পুরুষ-অবয়বাদি উপরে এবং স্ত্রী-অবয়বাদি অভ্যন্তরে। আবার কখনো কখনো দেখা যায় যে, প্রকাশ্যে স্ত্রী-অবয়ব উপরে রহিয়াছে বটে, কিন্তু অভ্যন্তরে পুরুষ-স্নায়ু প্রবল।

দেখা গিয়াছে, গর্ভ-অবস্থায় বা ভ্রূণ-অবস্থায় দুইটি যমজ শিশু একত্র সংযুক্ত হওয়ায় পুরুষ-অবয়ব বা স্ত্রী-অবয়ব উপরে বা ভিতরে বিদ্যমান থাকে। কখনো কখনো এরূপও দেখা গিয়াছে যে, একই পুরুষের দেহে সমস্ত পুরুষ ও স্ত্রী-চিহ্ন - দাড়ি, স্তন প্রভৃতি সম্পূর্ণভাবে বিদ্যমান, কিন্তু জিজ্ঞাসা করিলে সে ব্যক্তি বলিয়াছে যে, সে পুরুষমানুষ। যাঁহারা এই বিষয়ে গবেষণা করেন, তাঁহারা ইহা বিশেষরূপে জানেন। এইরূপও দেখা গিয়াছে যে, সতেরো-আঠারো বৎসর বয়স্ক যুবা পুরুষের স্তন অল্পপরিমাণে স্ফীত হইয়া তাহা হইতে দুগ্ধ নির্গত হইতেছে। এই যুবকের এইরূপ অবস্থা প্রায় এক বৎসর বা দেড় বৎসর কাল ছিল; তাহার পর, আবার সাধারণ অবস্থা ফিরিয়া আসিল।

এইরূপ নানা উদাহরণ দ্বারা বেশ স্পষ্ট বুঝা যায় যে, একই দেহের ভিতর পুরুষ-স্নায়ু ও স্ত্রী-স্নায়ু বা পুরুষ-যন্ত্রাদি ও স্ত্রী-যন্ত্রাদি থাকেই; কেবল, একটি মুখ্য ও অপরটি গৌণ। এই সকল হইল জীববিদ্যার আলোচনার বিষয়। এইজন্য এ স্থলে ইহার বিষয় আর বিশেষ করিয়া বলিবার আবশ্যক নাই।

সাধারণ লোক অতি অল্পসংখ্যক স্নায়ুমাত্র জাগ্রত করিতে পারে এবং সেইগুলি দিয়া দৈনন্দিন নিয়মিত কার্য করিয়া থাকে। অপর যে বহুসংখ্যক স্নায়ু সুষুপ্ত আছে, সে বিষয়ে তাহাদের কোনো সংজ্ঞা নাই। কিন্তু দেখা যায় যে পরমহংস মশাই বর্তমান যুগে সকল লোক অপেক্ষা অতি সুষুপ্ত স্নায়ুসমূহ জাগ্রত করিয়াছিলেন এবং বহু প্রকার স্নায়ু-প্রক্রিয়া দেখাইয়াছিলেন। সাধারণ লোক বা অভিনেতারা যদিও স্ত্রীভাব দেখাইবার চেষ্টা করে, কিন্তু তাহা আনুমানিক অনুকরণ মাত্র। পুরুষ-স্নায়ু দিয়া স্ত্রীভাব বিকাশ করা যায় না। পরমহংস মশাই পুরুষ-স্নায়ু ও স্ত্রী-স্নায়ু সমভাবে জাগ্রত করিতে পারিতেন। তিনি উভয়বিধ স্নায়ু দিয়াই ভাব বা শক্তি বিকাশ করিতেন:

"একা সাজে পুরুষ-প্রকৃতি;
বিপরীত রতি * * *।"

বহুবিধ চিন্তা ও অতি কঠোর তপস্যা করিয়া পরমহংস মশাই পুরুষ-দেহে সমস্ত সুষুপ্ত স্ত্রী-স্নায়ু জাগ্রত করিয়াছিলেন। সাধারণ লোকের ভিতর এইরূপ দেখা যায় না। কেবল মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের বিষয় উল্লেখ আছে যে, তিনি ইচ্ছা করিলে স্ত্রীভাব জাগ্রত করিতে পারিতেন। তিনি যখন শ্রীরাধার ভাব বিকাশ করিতেন, তখন অবিকল শ্রীরাধার ভাব বিকাশ করিতেন, তখন অবিকল শ্রীরাধার মতো হইয়া যাইতেন - অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, ভাবভঙ্গী প্রভৃতি সমস্ত বিষয়ে বিরহ-বিধুরা শ্রীরাধার মতো হইয়া যাইতেন। পুরুষ-স্নায়ু ও স্ত্রী-স্নায়ু সমভাবে জাগ্রত করিয়া উভয় শ্রেণীর স্নায়ু হইতেই ভাব ও শক্তি বিকাশ করিতে পারিতেন বলিয়া মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যকে লোকে বলিত, 'বহির্রাধা, অন্তঃকৃষ্ণঃ'।

পরমহংস মশাই-এর এইরূপ স্নায়ু-পরিবর্তন সকলেই দেখিয়াছেন। যেরূপ শ্রেণীর লোক তাঁহার সহিত কথাবার্তা কহিতেন, অতি অল্পকালমধ্যেই তিনি সেইরূপ হইয়া যাইতে পারিতেন। তিনি তাঁহার সমস্ত স্নায়ুপুঞ্জ নূতন প্রকারে সামঞ্জস্য করিয়া উপস্থিত ব্যক্তির সহিত কথাবার্তা কহিতেন। এইজন্য তিনি স্ত্রীলোকের সহিত স্ত্রীলোক, বালকের সহিত বালক, যুবকের সহিত যুবক, পণ্ডিতের সহিত পণ্ডিত, ভক্তের সহিত ভক্ত, জ্ঞানীর সহিত জ্ঞানী এবং রসিকের সহিত রসিক হইতে পারিতেন। এই সকল হইল তাঁহার সম্বন্ধে বিশেষ করিয়া লক্ষ্য করিবার বিষয়। A great man is one who can transform himself into various forms according to circumstances - যিনি পারিপার্শ্বিক অবস্থা অনুযায়ী নিজেকে সম্পূর্ণরূপে রূপান্তরিত করিতে পারেন, তিনিই মহাপুরুষ।

যীশুর সম্বন্ধেও এইরূপ অনেক ঘটনার উল্লেখ আছে। তিনিও এইরূপ স্নায়ু-পরিবর্তন করিয়া বালকের কাছে বালকের মতো হইতেন, স্ত্রী-ভক্তদের কাছে স্ত্রীলোকের মতো হইতেন, এবং অন্যান্য লোকদিগের কাছে অন্যান্য রূপ হইতেন। বাইবেল-এ এই ভাবটিকে Transfiguration বা আকার পরিবর্তন বলা হইয়াছে। এমন কি, এইরূপ প্রবাদ আছে যে, যীশুর বিষয় চিন্তা করিয়া সমাধিস্থ হওয়ায় সেণ্ট্ ফ্রান্সিস্ অভ্ অ্যাসিসি-র দেহে, যীশুর হাত দুইটিতে যে পেরেক মারা হইয়াছিল এবং পাঁজরায় যে বর্শার আঘাত করা হইয়াছিল, সেই সকল ক্ষতচিহ্ন বিকাশ পাইয়াছিল। এ সব বিষয় অনেক কিছু বলা যাইতে পারে। বিষয়টি অতি জটিল।

স্বামীজী লন্ডনে বক্তৃতাকালে এক দিন বলিয়াছিলেন যে, আচার্য শঙ্কর তাঁহার শিষ্যমণ্ডলী লইয়া এক স্থানে যাইতেছিলেন। সম্মুখে একটি পাহাড়। পাহাড়টি ঘুরিয়া যাইলে বিলম্ব হইবে। শঙ্কর শিষ্যদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, "পাহাড় ঘুরিয়া যাইবে, না পাহাড় ভেদ করিয়া যাইবে?" শিষ্যেরা এ কথার অর্থ বুঝিতে পারিল না। তাহারা পাহাড় ঘুরিয়া যাইবার ইচ্ছা প্রকাশ করিল। শঙ্কর তাহাদের সেইরূপ অনুমতি দিলেন; কিন্তু তিনি নিজে ঐ পথ দিয়া যাইলেন না। শিষ্যেরা বহুক্ষণ পরে গন্তব্যস্থানে আসিয়া দেখেন যে, আচার্য শঙ্কর অনেক পূর্বেই সেখানে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছেন।

এই উপাখ্যানটি তুলিয়া স্বামীজী বুঝাইতে লাগিলেন, "মন বা চিৎ-শক্তি যখন উচ্চ স্তরে যায়, তখন শরীরের পরমাণুসমূহ - জড় বা ভৌতিক বিন্দুসকল তাহার আজ্ঞাধীন হইয়া থাকে। সাধারণ অবস্থায়, জড় পরমাণুসকল চিৎ-শক্তিকে পরিচালিত ও সংযমিত করিতেছে; কিন্তু চিৎ-শক্তি যখন জড়-শক্তির প্রভাব হইতে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করিয়া নিজ তেজঃপূর্ণ ভাবে উপনীত হইয়া বহু উচ্চ অবস্থায় উঠে, তখন জড় পরমাণুসকল তাহার আজ্ঞাবহ হইয়া থাকে। এইজন্য শঙ্কর জড় পরমাণুসমূহকে বিশ্লেষ করিয়া চিৎ-শক্তি ও কারণ-শরীর লইয়া গন্তব্যস্থানে যাইলেন এবং পরে জড় পরমাণুসকলকে পুনরায় সংগঠন করিয়া দেহ ধারণ করিলেন। শঙ্কর বা তাঁহার মতো উচ্চ অবস্থাপন্ন অন্যান্য মহাপুরুষেরা নিজেদের দেহ এইরূপ ইচ্ছামতো পরিবর্তন করিতে পারেন।"

যীশুর উপাখ্যান তুলিয়া স্বামীজী বলিয়াছিলেন, "যীশুর মৃত্যুর পর তাঁহার শিষ্যেরা তাঁহাকে কয়েক বার দর্শন করিয়াছিলেন। এমন কি স্পষ্টভাবে তাঁহার হাত-পা ইত্যাদি স্পর্শ করিয়াছিলেন। ইহার কারণ এই যে, যীশুর স্থূল শরীরের যে জড় পরমাণুসমূহ, তাহাই কেবল বিচ্ছিন্ন ও বিশ্লিষ্ট হইয়াছিল, কিন্তু তাঁহার কারণ-শরীর ও চিৎ-শক্তি অক্ষুণ্ণ ছিল। এইজন্য যীশু মৃত্যুর পরও কয়েক বার পরমাণুসমষ্টি সংযোজিত করিয়া স্থূল দেহে আবির্ভূত হইয়াছিলেন এবং মৃত্যুকালে তাঁহার দেহে যে পেরেক ও বর্শার চিহ্ন ছিল, তাহাও তখন স্পষ্টভাবে দেখা গিয়াছিল।" যীশু যে নিজের দেহ পরিবর্তন করিয়া অপর এক জ্যোতির্ময় দেহ ধারণ করিয়াছিলেন এবং তাঁহার দেহ হইতে যে এক সময় মহাজ্যোতি বিনিঃসৃত হইয়াছিল - এ বিষয়ে স্বামীজী দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক যুক্তির সাহায্যে বেশ বুঝাইয়াছিলেন।

লন্ডনে বক্তৃতাকালে স্বামীজীর যে সব ফোটো লওয়া হইত, সেই সকল ফোটো নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলে বেশ বুঝা যায় যে, একই চেয়ারে বসিয়া ও একই পোষাক পরিয়া ছয়-সাত রকমের চেহারা তোলা হইয়াছে। স্বামীজী যেমন মনের ভাব পরিবর্তন করিয়াছেন, ফোটোতেও সেইরূপ চেহারার পরিবর্তন হইয়াছে। স্টার্ডি1 সেই ফোটোগুলি আনিলে দেখিয়া আশ্চর্যান্বিত হইয়াছিলাম।

কিন্তু স্বামীজীকে কখনো স্ত্রীভাবাপন্ন হইতে দেখিয়াছি বলিয়া আমার স্মরণ হয় না। স্বামীজী রুদ্রের অংশে জন্মিয়াছিলেন। রুদ্রের ভাব বা ক্ষাত্রশক্তি তাঁহার মধ্যে প্রবল ছিল। এইজন্য তাঁহার মধ্যে মৃদুভাবের তত স্ফূরণ পাইত না। বুদ্ধদেবের ভিতরও স্ত্রীভাবের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায় না। কারণ, বুদ্ধদেবও রুদ্রের অংশে জন্মিয়াছিলেন এবং তাঁহার ভিতর রুদ্রের ভাব ছিল।

এ ক্ষেত্রে জানা আবশ্যক যে, মনকে দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যাইতে পারে: ক্রিয়াশীল মন ও নিশ্চেষ্ট মন - Active mind ও Passive mind. একটির বৃত্তি হইল নিজের ব্যক্তিত্ব বা স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখিয়া চলা, অপরটির বৃত্তি হইল পরের অনুকরণ করিয়া চলা। এইজন্য, ইহা বিশেষ করিয়া জানা আবশ্যক যে, পরমহংস মশাই যদিও স্নায়ুপুঞ্জ পরিবর্তন করিয়া বিভিন্ন অবয়বসমূহের বহু প্রকার ভাব দেখাইতেন, কিন্তু তিনি কখনো নিজের ব্যক্তিত্ব লোপ করিতেন না। এইটি হইল তাঁহার বিশেষত্ব। অধিকাংশ সময় সাধারণ লোক ভাবপরিবর্তন করিতে গিয়া, নিজ ভাব হারাইয়া ফেলে এবং অপরের ভাব সহ্য করিতে না পারিয়া শেষে, অপরের ভাবপ্লাবনে ভাসিয়া যায়। সকল মহাপুরুষদিগের জীবনী পাঠ করিলেই দেখা যায় যে, তাঁহারা পূর্বতন মহাপুরুষদিগের খুব সম্মান করিয়া চলিতেছেন, খুব শ্রদ্ধাপূর্ণ হইয়া তাঁহাদের বিষয় কথা কহিতেছেন, কিন্তু নিজের ব্যক্তিত্ব কখনো ক্ষুণ্ণ বা লোপ করিতেছেন না। মহাপুরুষদিগের মনোবৃত্তি সাধারণ লোকের মনোবৃত্তি হইতে এইরূপ অন্য প্রকার হইয়া থাকে।

যাহা হউক, পরমহংস মশাই ও শ্রীচৈতন্যের ভিতর স্ত্রীভাবটি বেশ স্পষ্ট পরিলক্ষিত হইত। এ স্থলে ভালমন্দের কোনো বিচার হইতেছে না, মাত্র সুষুপ্ত স্নায়ুকে তাঁহারা যে কিরূপে জাগ্রত করিয়াছিলেন, তাহাই দেখানো উদ্দেশ্য। দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক মত বিশেষরূপে জানা থাকিলে, কিরূপে পরমহংস মশাই-এর ইচ্ছামতো দেহ ও স্নায়ু পরিবর্তিত হইত এবং কিরূপেই বা তাঁহার ভাব ও চিন্তাধারা উঠিত তাহা বেশ স্পষ্ট বুঝা যায়। পরমহংস মশাই অপরের অনুকরণ করিয়া কতকগুলি ভাব জগৎকে দেন নাই; তিনি অনেক প্রকার নূতন ভাব উদ্ভূত করিয়া জগৎকে দিয়াছেন।


1. শ্রীযুত ই. টি. স্টার্ডি, স্বামী বিবেকানন্দের য়ুরোপীয় শিষ্য।

No comments:

Post a Comment